
বাড়িতে বিড়াল নিয়ে আসার আগে আপনাকে বেশ কয়েকটা জিনিস কিনে ফেলতে হবে। বাড়িতে আসার সঙ্গে সঙ্গেই যেন ওইসব নতুন জিনিসের সঙ্গে সে পরিচিত হয়ে উঠতে পারে। বাড়িতে নিয়ে আসার আগে বিড়াল বাচ্চাটি যেখানে আছে সেখানে গিয়ে যদি দু’একদিন তার সঙ্গে সামান্য খেলাধুলো করে নিতে পারেন তাহলে খুব ভালো হয়। এর ফলে আপনার শরীরের গন্ধের সঙ্গে ও আগে থেকেই পরিচিত হয়ে থাকবে। যদি সম্ভব হয় তাহলে ওর পুরনো তোয়ালে আর খেলনা নিয়ে আসতে পারেন, খুবই ভালো হয়। পরিচিত গন্ধ পেলে নতুন জায়গায় মানিয়ে নিতে ওর সুবিধা হবে।
এ বার জেনে নিন ওর ভালো ভাবে বেড়ে ওঠার জন্য আপনাকে কী কী ব্যবস্থা নিতে হবে।
ক্যারিয়ার বা ক্রেট
প্রথমেই এটা কিনে ফেলতে হবে। এটাতে চেপেই ও আপনার বাড়িতে আসবে। লক্ষ্য রাখতে হবে এই ক্রেট যেন ওর পক্ষে নিরাপদ হয় এবং যথেষ্ট আলো-হাওয়া খেলতে পারে এর মধ্যে। আর দেখতে হবে আপনি যেন খুব সহজেই বিড়াল বাচ্চাটিকে ক্রেট থেকে বের করে আনতে পারেন এবং ভিতরে আবার রেখেও দিতে পারেন।
কমফোর্ট জোন স্প্রে আর স্ক্র্যাচ কন্ট্রোল স্প্রে কিনে রাখবেন। ওকে ওই ক্রেট-এ ঢোকানোর আগে ভালো করে চার কোণায় স্প্রে করে দিন। সেই স্প্রে শুকিয়ে গেলে একটা নরম তোয়ালে পেতে তার উপর ওকে বসিয়ে দিন বাড়ি নিয়ে আসার আগে।
খাবার এবং জলের পাত্র
ও বাড়িতে আসার আগেই যেন ওর খাবার আর জলের পাত্র নির্দিষ্ট জায়গায় রাখা থাকে। যদি বিড়ালটি বাচ্চা হয় তাহলে খুব বড় এবং গভীর পাত্র কিনবেন না। মনে রাখতে হবে এই দুটি পাত্রই রোজ পরিষ্কার করতে হবে। এই পাত্র দুটি যেন তার লিটার বক্স থেকে দূরে থাকে সেই দিকেও নজর দিতে হবে। কারণ বিড়াল কখনওই একই জায়গায় খাওয়া এবং মল/মূত্র ত্যাগ করা পছন্দ করে না।
খাবার
আগে থেকে জেনে নিতে হবে এতদিন যেখানে ও ছিল সেখানে কী ধরনের খাবার ওকে দেওয়া হয়েছে। প্রথম কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই অবশ্য ও নতুন পরিবেশ এবং খাওয়া-দাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেবে। তবে আগে যা খেত সেরকমই কিছু প্রথম দিকে দিতে পারলে ওর পক্ষে জায়গাটিকে আর তেমন নতুন মনে হবে না। তবে বিড়াল বাচ্চার বয়সের উপর নির্ভর করবে তাকে কী খেতে দেবেন। একেবারে বাচ্চাদের দিতে হবে কিটেন স্পেশাল ফুড। আর বড় বিড়াল হলে তাদের জন্য তৈরি করা খাবার দেওয়াই শ্রেয়। বাচ্চাটির সঙ্গে আপনার যথেষ্ট বন্ধুত্ব হয়ে গেলে একটা ক্যাট ডেন্টাল কিট হাতের কাছে রেখে দেবেন।
বিছানা
প্রায় প্রত্যেক বিড়ালই যেখানে সেখানে ঘুমিয়ে পড়তে পারে। কিন্তু ওর যদি একটা আরামের বিছানা থাকে তাহলে ও খুব খুশি হবে। বিছানাটি যেন নরম হয়। বিছানাটি এমন জায়গায় রাখবেন যেখানে ও নিজেকে নিরাপদ মনে করবে। বাজারে এমন নানা ধরনের বিছানা পাওয়া যায়। বিছানার ওয়ার যেন খুলে কাচা যায়। বিছানা যদি জানলার পাশে থাকে তাহলে বাইরের দৃশ্য দেখে ও রিল্যাক্স করতে পারবে। বিড়াল যদিও খুব কম জায়গা নেয়, তবু বিছানার মাপ যেন একটু বড় হয়, যাতে ও একটু বেশি ছড়িয়ে থাকতে পারে।
লিটার বক্স
বাজারে নানা ধরনের লিটার বক্স পাওয়া যায়। সেলফ-ক্লিনিং লিটার বক্স পেলে সেটাই নেবেন। কিন্তু এর মেকানিজম কিছুটা জটিল। এক ধরনের মাথায় ঢাকা দেওয়া লিটার বক্স পাওয়া যায়, সেটা নিলে আপনার পোষ্যের প্রিভেসি বা গোপনীয়তা বজায় থাকবে। তবে নিয়মিত এই লিটার বক্স পরিষ্কার রাখতে হবে।
স্ক্র্যাচিং পোস্ট এবং খেলনা
বিড়াল আঁচড়াবেই। এবং তার জন্যই স্ক্র্যাচিং পোস্ট রাখা দরকার। এই পোস্ট যেন আপনার পোষ্যের উচ্চতার চেয়ে সামান্য বেশি লম্বা হয়।
খেলতে ভালোবাসে বিড়াল। তাই নানা ধরনের নিরাপদ খেলনা ওর কাছে দিয়ে রাখলে ও নিজেই সেগুলো নিয়ে খেলতে পারবে। এমন কোনও খেলনা দেবেন না যাতে ছোট ঘণ্টা বা পালক থাকে। সেসব গিলে বিপত্তি ঘটাতে পারে।
Post a Comment
You must be logged in to post a comment.